ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক বরখাস্ত

বাংলাদেশ
Spread the love

বাংলা ডেস্ক :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৪তম সিন্ডিকেট সভা শেষে রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ন কবীর এই সিদ্ধান্ত নেন।
এর মধ্যে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে স্থায়ী বরখাস্ত এবং প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুধবার ওই দুই শিক্ষককে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কিন্তু প্রশাসনের এই আদেশে খুশি না হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের গতি বাড়িয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ সব বিভাগে ও ব্যাংকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

পরে আন্দোলনকারীরা দুই শিক্ষককে স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল আটকে দেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আজ সকালে ৮৪তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে যৌন হয়রানির ঘটনায় দুই শিক্ষককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এসময় ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ন কবীরসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় ঘোষিত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে ওই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। এ ঘটনায় ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে পরদিন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু তদন্ত কমিটি গঠনের একদিন পর ৬ মার্চ আন্দোলনকারীরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। তখন তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেটসহ ভাঙচুর করে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকেও তদন্তের আওতায় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন শিক্ষার্থীরা।