বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি আব্দুল মাজেদ কলকাতায় বসে সুদের ব্যবসা করতেন। এছাড়া টিউশনি করিয়েও সংসার চালাতেন।
কলকাতার ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রকাশিত সুজিত ভৌমিকের ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘ঘাতকের ডেরা’র দ্বিতীয় পর্বে এ তথ্য দেওয়া হয়।
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা ৪ মিনিটে কলকাতার বেডফোর্ড লেনের ভাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর একটি ওষুধের দোকানে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি আব্দুল মাজেদ। সেখানে মিনিট আটেক থাকার পর ঠিক ১০টা ১২ মিনিটে রিপন স্ট্রিটের দিকে মুখ করে ফের পথ চলতে শুরু করেন। তখন থেকেই তাকে অনুসরণ করা শুরু করে দুই ব্যক্তি। পরে তাদের সঙ্গে আরও দুজন যোগ দেন। মোট চারজন সেদিন পিছু নিয়েছিলেন মাজেদের। সিসিটিভির ফুটেজে সবার ছবি ধরা পরে।
তদন্তে নেমে পুলিশ ও এসটিএফ-এর কর্মকর্তারা পিছু নেওয়া ওই স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের কাবুলিওয়ালা ভেবে প্রথমে ভুল করেছিল। কারণ মাজেদ ছোটখাট সুদের ব্যবসা করতেন।
এরপর আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ধরে রাস্তা পার হয়ে এজেসি বোস রোডে আসেন মাজেদ। উদ্দেশ্য বাস ধরা। গন্তব্য কলকাতার পিজি হাসপাতাল।
এর পরের ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ওই চারজন মাজেদের সঙ্গে কথা বলছে। তবে ক্যামেরা উন্নত না হওয়ায় কী কথা হয়েছিল, তা শোনার উপায় নেই। ঠিক তখনই মৌলালির দিক থেকে আসা একটি সল্টলেক-সাঁতরাগাছি রুটের বাসে উঠতে দেখা যায় মাজেদকে। যথারীতি সেই বাসে চাপেন ওই চারজনও। এরপর আর কোনও ফুটেজ নেই।
তদন্তে নেমে পুলিশ এজেসি বোস রোডের প্রতিটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বাস স্টপ থেকে পিজি হাসপাতাল পর্যন্ত কোথাও বাস থেকে নামতে দেখা যায়নি আব্দুল মাজেদকে।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক সূত্র জানিয়েছে, মাজেদের মোবাইলের সর্বশেষ টাওয়ার লোকেশন ছিল মালদহ। যা থেকে গোয়েন্দাদের অনুমান, মাজেদ ঘুরপথে হাওড়া স্টেশনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ট্রেনে প্রথমে গুয়াহাটি। পরে শিলং হয়ে ডাওকি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ আসেন তিনি।
এরপর গত ৭ এপ্রিল ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধুর খুনি আব্দুল মাজেদকে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত শনিবার মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
এই খুনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের বেডফোর্ড লেনে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।