৭৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টি আমিরাতে

আন্তর্জাতিক
Spread the love

বাংলা ডেস্ক :
৭৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এ বৃষ্টিপাত হয়েছে মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই)। গত দু’দিনে টানা বৃষ্টিপাতে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বন্যা দেখা দিয়েছে। ছোট-বড় শহরের চারদিকে থই থই পানির কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।

আবুধাবি, দুবাই, আল আইন, শারজাহ ও আজমানের অনেক ভবন ও ভিলায় বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এমন বৈরী আবহাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে। এ ঘটনায় বুধবার বিকেল পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ইউএইর রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইনস এমিরেটস বুধবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দুবাই ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য চেক-ইন স্থগিত করেছে। খারাপ আবহাওয়া ও রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে ফ্লাইট পরিচালনায় জটিলতা তৈরি হয়। একই কারণে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুবাই ও শারজাহগামী ৯টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির কারণে দুবাই বিমানবন্দরের একটি রানওয়ে ডুবে যায়। রানওয়েতে পানি থাকায় দেশটির আরেক এয়ারলাইনস ফ্লাই দুবাই বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। তীব্র ঝড়ের কারণে বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে ২৫ মিনিটের জন্য বন্ধ ছিল। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ৪৫টি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।

দুবাই বিমানবন্দর এক বিবৃতিতে জানায়, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্য ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে তারা কাজ করছে।

মঙ্গলবার বৃষ্টির কারণে দুবাই মেট্রো পরিষেবাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেট্রো চলাচল স্থগিত করা হলে বিভিন্ন স্টেশনে প্রায় ২০০ যাত্রী আটকা পড়েন। রোডস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আরটিএ) সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোর রেড ও গ্রিন লাইনে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে।

সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার দিনভর সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবল বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনসাধারণের জন্য সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বৃষ্টিপাত ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস পরিচালনা শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারি কর্মকর্তাদের ঘরে থেকেই অফিস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ভারী বৃষ্টির পর দেশটির কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, পানি নেই। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বেশ কিছু কয়েকটি এলাকায় শিশুরা অনলাইন ক্লাসেও অনুপস্থিত ছিল।

অন্যদিকে দেশটির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। রাস্তায় চলাচলের সময় বন্যার পানিতে অসংখ্য গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বন্যাপ্রবণ ও পাহাড়ি এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। নাগরিকদের আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সমুদ্রে যাওয়া এবং পাহাড় ও উপত্যকা পরিদর্শন এড়িয়ে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ২৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৪৯ সালের পর সর্বোচ্চ।