তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় অলস বসে থাকার পর আবারো ব্যস্ততা বেড়েছে লক্ষ্মীপুরের জেলে পরিবারগুলোতে। হাসি ফুটেছে প্রায় ৫২ হাজার জেলের মুখে। এখন শুধু রুপালি মাছের খোঁজে নদীতে নৌকা ভাসানোর অপেক্ষা।
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ সোমবার রাত ১২টা থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশ শিকার। ফলে, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বাজারে আবার মিলবে ইলিশ। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় এরই মধ্যে সাগরে মাছ শিকারের প্রস্তুতি শেষ করছে জেলেরা। মাছ কেনার প্রস্তুতি নিয়েছেন মৎস্যঘাটের আড়তদাররাও। এবার নদীতে সফল অভিযান হয়েছে বলে দাবি মৎস্য কর্মকর্তাদের।
এত দিন কর্মহীন থেকে ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন অনেক জেলে। এছাড়া মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে জেলেদের যে প্রণোদনার চাল বিতরণে নিয়ম করেছে সরকার, সেখানেও অনিয়মের অভিযাগও করেছেন অনেক জেলে পরিবার।
তারা জানান, সরকার নিয়ম করলেও প্রশাসনের অনিময়ের ফলে প্রণোদনার চাল পাননি তারা। আর শুধু চাল দিয়ে কি সংসার চালোনো যায়। চালের পাশাপাশি যদি সরকার কিছু অর্থও সহায়তা দিতো তাহলে আরো ভালো হতো।
এদিকে মৎস্য সংরক্ষণে প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযান সফল হওয়ায় এবার ইলিশের উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা মৎস্য কর্মকর্তার। ২২ দিনে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বিভিন্ন স্থানে বেপরোয়াভাবে ইলিশ নিধন করা হয়েছে। অভিযান চালাতে গিয়ে কোস্টগার্ডের জাহাজের ওপর হামলাসহ একাধিক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাতুব্বর বলেন, ইলিশ নিধন বন্ধ রাখতে প্রশাসনের চেষ্টা ছিল। কিন্তু নদীতীরবর্তী জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কারণে পুরোপুরি সফল হওয়া যায়নি। বিশেষ করে হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের মাছঘাট মালিক কয়েকজন জনপ্রতিনিধি প্রতি বছরের মতো এবারও বেপরোয়া ছিলেন।
এদিকে নদীতে মাছ শিকারে প্রস্তুত চাঁদপুরের প্রায় ৬০ হাজার জেলে। জাল বোনা, ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সাথেসাথেই নদী ও সাগরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়বেন জেলেরা।
মাছ ধরা শুরুর প্রস্তুতিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে শরীয়তপুর, ভোলা, বরগুনা, নোয়াখালীসহ প্রায় সব উপকূলীয় জেলার জেলেপল্লী ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলো। আশানুরুপ ইলিশ পেলে ২২ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব, বলছে জেলেরা।
জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে গত ৪ অক্টোবর ইলিশসহ সব ধরণের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।