বগুড়ায় বিস্ফোরণে লন্ডভন্ড বাড়িঘর, গৃহকর্তা গ্রেফতার

দেশবাণী
Spread the love

বাংলা ডেস্ক :
রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে কেপেউঠে সমস্ত এলাকা। শব্দ শোনাযায় ঘটনাস্থল থেকে অনেক দুরের এলাকা থেকেও। রোববার রাতে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বগুড়া শহরের মালতিনগর ভাটকান্দি মোল্লাপাড়ার একটি বাড়িতে। বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনায় গৃহকর্তা পটকা ব্যবসায়ী রেজাউল করিমকে (৪২) গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ৪ জনের মধ্যে গুরুতর একজনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। ওই ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম সোমবার দুপুরে গৃহকর্তার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে এ মামলা করেন।

বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আলী আশরাফ জানান, বিস্ফোরণে লন্ডভন্ড বাড়িটি পুলিশ প্রহরায় রাখা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বোম নিষ্ক্রিয় দল এলে বিস্ফোরণের কারণ ও অন্যান্য বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বগুড়া শহরের মালতিনগর ভাটকান্দি মোল্লাপাড়ার লয়া মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম মাছ, সাটারিং ব্যবসার পাশাপাশি বাড়িতে কিছুটা গোপনে পটকা ও আতশবাজি তৈরি এবং বিক্রি করে থাকেন। তার টিনশেড আধপাকা বাড়ির তিনটি ঘরে এসব মজুদ করা ছিল। রোববার এশার নামাজের সময় রেজাউল করিম মসজিদে। রাত ৯টার দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে দুটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। ঘরের টিনের চালা উড়ে পাশে গিয়ে পড়ে। ঘরের টিন পাশের বড় আমগাছে গিয়ে ডালে আটকে যায়। বিস্ফোরণের মাত্রা এত বেশি ছিল যে, আরসিসির চিকন বিম ভেঙে ঘরগুলো লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা রেজাউল করিমের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা (৩৮), তার মেয়ে সুমাইয়া আকতার (১৫), ভাই রাশেদুল ইসলামের মেয়ে জিম খাতুন (১৬) ও প্রতিবেশী আলী হোসেনের মেয়ে তানসিম বুশরার (১৪) শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এদের মধ্যে জিম, বুশরা ও সুমাইয়াকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুশরার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে গৃহকর্তা পটকা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম দাবি করেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এমনটা হয়েছে।

তবে বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল জলিল জানান, বিধ্বস্ত ঘর থেকে তিনটি অক্ষত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। তিনি প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনাকে বিস্ফোরণজনিত বিস্ফোরণ বলে উল্লেখ করেন। তবে তদন্ত শেষে এ বিস্ফোরণের ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য দেওয়া সম্ভব হবে।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, বনানী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে গৃহকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতদেরও আসামি রাখা হয়েছে। পরে গৃহকর্তা রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও জানান, বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত বাড়িটি কর্ডন করে রাখা হয়েছে। ডিএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এলে বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে ওই বাড়িতে নাশকতার কোনো প্রমাণ মেলেনি। তবে বাড়ির মালিক অবৈধভাবে বিস্ফোরক রেখে পটকা তৈরি করছিলেন। আবাসিক এলাকায় কাজটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা ও গৃহকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।