বগুড়ায় চলছে অনুমোদনবিহিন মুননাইট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিনব বানিজ্য!

দেশবাণী
Spread the love

শিক্ষা নয়, বানিজ্য ? শিক্ষার নামে বগুড়া সদর সহ বেশ কয়েকটি জেলায় চলছে টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষার অভিনব বানিজ্য। সূত্রে জানা যায়, অনুমোদনবিহিন নামকাওয়াস্তে একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগের চিঠির সূত্র ধরে চলে অনুসন্ধান ।
অনুসন্ধানের ১ম দিন
ঘটনার স্থান ,বগুড়া সদরের ইছাবপুর গ্রাম , সাইনবোর্ড ঝুলছে ,মুননাইট থ্রী ষ্টার শিশু নিকেতন ,পরিচালনায় ,সাথী এডুকেশন এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন ।
২য় দিন
বগুড়া সদরের ইসলামপুর গ্রামের ভিতরে দেখা মিলে আরেকটি সাইনবোর্ড , মুননাইট থ্রী ষ্টার শিশু নিকেতন , প্লে থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করানো হয়।
৩য় দিন
জেলার নন্দীগ্রাম ও নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার হাপুনিয়া গ্রামে সাইনবোর্ড দেখা পাওয়া গেল ,সাথী শিক্ষা কেন্দ্র, পরিচালনায়, সাথী এডুকেশন এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন ।
এবারের মূল অফিস সদরের বুজরুগবাড়ীয়া গ্রামের ভিতরে অফিস পরিচিতি নাম পৃর্বে ছিল মুননাইট থ্রী ষ্টার শিশু নিকেতন,অভিযোগের পর তা পরিবর্তন করে সাথী এডুকেশন এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন কতৃপক্ষ ।
শিক্ষা মন্ত্রনালয় বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এনজিও বুরোর কোনো অনুমোদনের বৈধ কাগজপত্র নেই বলে দাবী করেছেন অভিযোগকারি ব্যক্তি।
অভিযোগের সূত্রে জানা যায় , মুননাইট থ্রী ষ্টার শিশু নিকেতন পরিচালনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কোন অনুমোদন নেই,এনজিও পরিচালনার জন্য বৈধ কোন কাগজ পত্র নেই।
সেই সাথে তিনি আরো অভিযোগ করেছেন -৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা ২০১৯ রেজিস্ট্রেশনের ফরম পুরনের নাম করে ৬০টাকার পরিবর্তে ২০০টাকা নিয়েছে প্রতিষ্ঠান মালিক মোস্তাফিজার রহমান ।
ভ’য়া প্রত্ষ্ঠিান খুলে প্রশাসনকে ফাকি দিয়ে শুধুমাত্র বগুড়া জেলায় ৭৫ টি স্কুল থেকে মোট ১৮৭২ জন শিক্ষার্থীর নিকট হতে প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে নিয়ে গড়ে ৩,৭৪,৪০০টাকা মাসিক আয় করছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বেতন কার্ড ,ভর্তি ফর্ম সহ সরকারি অনুদানের কথা বলে শিক্ষা কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে ২০/২৫ টাকা করে আদায় করেন মুননাইট কতৃপক্ষ।
অভিযোগের ব্যাপারে সত্যতা জানতে চাইলে মুননাইট থ্রী ষ্টার শিশু নিকেতন এর মালিক মোস্তাফিজার রহমান ও মিজানুর রহমান বলেন , যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন তিনি নিজের ইচ্ছায় এসব করনে নি আমার প্রতিষ্ঠানের চাকরিচুত কয়েকজন কর্মী মিলে আমার এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত এবং ঈর্ষানিত হয়ে এই অভিযোগ দাখিল করেছেন।
তবে শিক্ষা মন্ত্রনালয় বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এনজিও বুরোর অনুমোদনের বৈধ কোন কাগজপত্র তিনি/তারা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাবেক কর্মী আব্দুল ওয়াহেদ,আশরাফুল ঈসলাম ,ফরিদ ও নাটোরের রুপালীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তারা বলেন,ঐ প্রতিষ্ঠানের কোন কাগজপত্র না থাকায় আমরা চাকরী ছেেেড় দিয়েছি। সাথে তারা এও বলেন, শুধু বগুড়াতেই নয় নেত্রকোনা ,নাটোর জেলা সহ বেশকিছু উপজেলায় শিক্ষার নামে বানিজ্য করে আসছে।
উপরোল্লিখিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বগুড়া সদরের সিনিয়র শিক্ষা কর্মকর্তা সাজাদুল ইসলাম বলেন , ৫ম শ্রেনীর সমাপনী পরিক্ষার ২০১৯ রেজিস্ট্রেশনের ফরম পুরনের নাম করে ৬০টাকার পরিবর্তে ২০০টাকা নিয়েছে এটা আমাদের জানা নেই, অভিযোগের কাগজ হাতে পেলে আমরা অবশ্যই তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
অপরদিকে, সাথী এডুকেশন এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন এর বৈধ মুল মালিক নাটোর জেলার শিবলী আহমেদ এর প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব দূনীতি করছেন মোস্তাফিজার রহমান । এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিবলী আহমেদ এই প্রতিবেদককে বলেন ,ইতিপূর্বে নাটোর জেলায় শিক্ষা কর্মকান্ড পরিচালনাকালে মোস্তাফিজার রহমান আইনের ফাদে পড়ে এই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি যে এখনো আমার অগোচরে আমার প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব দূনীতি করছেন সেটা আমার জানা নেই। যেহেতু জানতে পারলাম খুব শিঘ্রই আমি তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।