গত বছর ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ক্রিকেটে বড় দুঃসংবাদ এসেছিল। জুয়াড়িদের প্রস্তাব গোপন করায় দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। যদিও পরে এক বছর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়।
বর্তমানে এক বছরের জন্য ক্রিকেটের বাইরে আছেন সাকিব। জুয়াড়িদের পাঠানো প্রস্তাবের বিষয়ে আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে না জানানোয় এই ধাক্কা খেতে হয়েছিল তাঁকে। তবে নিজের ভুল থেকে শিক্ষা পেয়েছেন তিনি। ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন এই বাংলাদেশি অলরাউন্ডার।
এ ব্যাপারে নিয়ে সকিব বলেন, ‘আমি বিষয়টি একটু হালকাভাবে নিয়েছিলাম। এখানে আমি সবকিছু আলোচনা করতে চাই না। তবে আমি যখন দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করলাম তাদের সব বললাম। তারা সবকিছু জানত, আমি সব প্রমাণ দিলাম, ভেতরে-বাইরের সবকিছুর খুঁটিনাটি তারা জানত। সত্যি কথা বলতে, সেই কারণেই মাত্র এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তা না হলে ৫-১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারতাম।’
অবশ্য এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন সাকিব। একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে এই ভুল করা উচিত হয়নি বলে মনে করেন তিনি, ‘আমি মনে করি একেবারে বোকার মতো ভুল করেছি। কারণ আমার যে অভিজ্ঞতা, আমি যে পরিমাণ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছি এবং আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ধারা নিয়ে যে পরিমাণ ক্লাস করেছি, তাতে আমার এই ভুল করা মোটেও উচিত হয়নি। সত্যিকার অর্থে আমি এখনো আফসোস করছি। আমি মনে করি, এই ধরনের কল বা বার্তা (জুয়াড়িদের মেসেজ) হালকাভাবে নেওয়া একেবারেই উচিত নয়। দুর্নীতি দমন কর্তাদের এসব জানানো উচিত। এই শিক্ষা আমি পেয়েছি, আমার জন্য বড় শিক্ষা এটি।’
নিজের প্রতি অধিক আত্মবিশ্বাস কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সাকিবের। বাংলাদেশি তারকা জানালেন, নৈতিকতার দিক দিয়ে তিনি নিজে ভুল না করাতেই জুয়াড়ির মেসেজে খুব একটা পাত্তা দেননি, ‘আমি সবসময় নিজের বেশিরভাগ বিষয়ই নিজে ঠিক করেছি। কখনো কখনো যে কারো সেই বোধটাই পেয়ে বসতে পারে যে, নাহ আমি তো ভুল করছি না তাহলে কী আর হবে। কিন্তু নৈতিকতার দিকে না ভুল হলেও নিয়মে তো ভুল হচ্ছে। এটি সবসময় মনে থাকে না। আমার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি এই ভুল আমার হতে পারে। আমি কখনো এসবে পাত্তা দেইনি। অথচ সেই আমি নিজেই এই ভুল করে ফেলেছি।’
সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর ২৯ অক্টোবর শেষ হবে সাকিবের নিষেধাজ্ঞা। নতুন ফেরায় ভক্তদের–ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশসেরা ক্রিকেটার, ‘এই পরিস্থিতি আমাকে পুরোপুরি শিক্ষা দিয়েছে। আগে আমি দেশের জন্য, নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য খেলছিলাম। তবে এখন আমি যা মনে করি, যারা আমাকে ১২-১৫ বছর সমর্থন দিচ্ছে তাদের জন্য আমি কী করতে পারি। আমি যা করেছি সেটার জন্য সমর্থকরা হতাশ। এখন কীভাবে তাদের ঋণ শোধ করতে পারি সেটাই আমার একমাত্র মানসিকতা।’