খেলা চলাকালে মাঠেই ফুটবলারের মৃত্যু

খেলা
Spread the love

ডেস্ক :
ফুটবল খেলা চলাকালেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মাঠেই মৃত্যুবরণ করেছেন গ্রিসের ফুটবলার আলেক্সান্দ্রোস লাম্পিস। গত পরশু (২ ফেব্রুয়ারি ২২) তৃতীয় বিভাগের দল লিউপুলির হয়ে খেলতে নেমেছিলেন ২১ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।
মিউনিসিপ্যাল স্টেডিয়ামে ম্যাচ চলাকালীন সময় হঠাৎ মাঠে লুটিয়ে পড়েন লাম্পিস। স্টেডিয়ামে কোনো অ্যাম্বুলেন্স উপস্থিত না থাকায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এতে করে তরুণ ফুটবলারের জীবন আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
যদিও খেলা চলাকালে মাঠেই মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা আগেও কয়েকটি ঘটেছে।
তেমনি কয়েকজন ফুটবলার :

শেয়িক তিওতে : আইভরি কোস্টের ফুটবলার ছিলেন তিওতে। তিনি নিউকাসেল ইউনাইটেড ক্লাবে খেলতেন। ২০১৭ সালে এক সোমবারের সকালে অনুশীলন চলাকালীন তিনি হঠাৎই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ফিল ও’ডোনেল : মাদারওয়েল দলের অধিনায়ক ছিলেন ফিল ও’ডোনেল অধিনায়ক। ডুন্ডির বিপক্ষে একটা ম্যাচ চলাকালীন ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং মারা যান। ৩৫ বছর বয়সি এই মিডফিল্ডারের কেরিয়ার গ্রাফটা অসাধারণ ছিল। তিনি স্কটল্যান্ড, সেলটিক এবং শেফিল্ড ওয়েডনেসডে’র হয়ে খেলেছেন। পরিবর্ত খেলোয়াড় মাঠে নামানোর আগেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

আন্তোনিও পুয়ের্তা : সেভিলা এবং স্পেনের উইং ব্যাক আন্তোনিও পুয়ের্তা মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রাণ হারিয়েছিলেন। গেতাফের বিপক্ষে একটা ম্যাচ চলাকালীন তিনি আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। স্যানচেজ পিজুয়ানে আয়োজিত এই ম্যাচের মাত্র ৩৫ মিনিটের মাথায় তিনি নিজের গোলের দিকেই জগিং করতে করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই ঘটে যায় এই বিপদ। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনদিন পর তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তার শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যায়। আর তারপরেই মৃত্যু হয়েছে।

মার্ক ভিভিয়ান ফো : ক্যামেরুনের ফুটবলার ছিলেন মার্ক ভিভিয়ান ফো। তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড দলের হয়ে খেলতেন। ২০০৩ সালের জুন মাসে ফ্রান্সে কলম্বিয়ার বিপক্ষে একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে তিনি নেমেছিলেন। ম্যাচের ৭২ মিনিটে সেন্টার সার্কেলে লুটিয়ে পড়েন ফো। তাকে স্ট্রেচারে শুইয়ে মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তার হৃদযন্ত্র বেশ কয়েকবার পাম্প করা হলেও কোনও সাড়া দেননা তিনি ।

নিয়ে যাওয়া হয় স্টেডিয়ামের মেডিকেল সেন্টারে। তখনও তিনি বেঁচে ছিলেন। তারপর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই ফো মারা গিয়েছিলেন। চিকিৎসা পরিভাষায় এটাকে হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি বলা হয়। জানা গেছে, এই রোগে শারীরিক অনুশীলন করার সময়েই মৃত্যুর ঝুঁকি সবথেকে বেশি থাকে।

ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়র : ২০০৩ সালে ভারতে ন্যাশনাল ফুটবল লিগে তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের হয়ে খেলতে এসেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো সেবাশ্চিয়ানো ডি লিমা জুনিয়র। ইস্টবেঙ্গলে একটা মরশুম কাটানোর পর তিনি গোয়ার ক্লাব ডেম্পোয় যোগ দেন। ২০০৪ সালের অক্টোবর মাসে মোহনবাগানের বিপক্ষে একটা ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন তিনি। ডেম্পোর দ্বিতীয় গোলের খোঁজে তিনি বক্সের মধ্যে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক সেইসময় সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের গোলরক্ষক সুব্রত পালের সঙ্গে তার ধাক্কাধাক্কি হয়। মাঠে কিংবা কোনও চিকিৎসক ছিলেন না যিনি জুনিয়রকে সাহায্য করতে পারতেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই জুনিয়র আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যায়।