ইউ বিউটি খান, তামিমকে নিয়ে মাশরাফী

খেলা
Spread the love

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা স্বপ্ন সবার ক্রিকেটারদেরই থাকে। কিন্তু নিশ্চিতভাবে স্কোয়াডে থেকেও নতুনদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে কয়জন পারেন? দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল তো সেটাই পেরেছেন। নিজ থেকেই আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

চোটের কারণে লম্বা সময় ধরে টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন না তামিম ইকবাল। তাতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তামিমের খেলা নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। সেই শঙ্কাই সত্যি হলো গতকাল বুধবার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়ালেন বাঁহাতি এই ওপেনার। দেশসেরা ওপেনারের এমন সিদ্ধান্তে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তামিমকে লম্বা স্ট্যাটাসে, তামিমের সাহসের প্রশংসা করেন মাশরাফী। সাবেক তারকা অধিনায়কের স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো—

নিজের ফেসবুক পাতায় মাশরাফী লিখেছেন, ‘তামিম ইকবাল খান, নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের একজন সেরা ব্যাটসম্যান। স্ট্যাটস ও তাই বলে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সব যোগ্যতা তার আছে। ক্রিকেট বোর্ড টিম ম্যানেজমেন্ট সবাই তাকে দলে রাখবে এটা সবারই জানা। কেন তামিম এ সিদ্ধান্ত নিলো তার যুক্তিও আছে অনেক। প্রথমত; তামিমের ইনজুরি, তারপর প্রায় এই নিয়ে পেছনের চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ সে খেলতে পারেনি। তার মানে প্রায় ১৬টা ম্যাচ, এতে হঠাৎ কোন ম্যাচ না খেলে মাঠে নামার পর নিজের ওপর নিজের বিশাল চাপ সৃষ্টি হবে। যা পরে ওর ওয়ানডে বা টেস্টে ওকে ক্যারি করতে হতে পারে।’

‘কথা হলো এখন যারা খেলছে তারা তো রান করেনি। আবার সেখানেও কথা আছে। যে উইকেটে খেলা হচ্ছে সেখানে রিয়াদ ছাড়া আর কোন দলের খেলোয়াড়ই ৫০ ছুঁতে পারেনি। ট্রু উইকেটে বিচার না করা একেবারেই অন্যায় হবে সৌম্য, লিটন বা নাঈম এর সাথে। সমস্ত কঠিন সিরিজগুলো সত্যিই এই ছেলেগুলো পার করছে। তাই তামিমের সিদ্ধান্তকে জাস্টিফাই করা খুব কঠিন কাজ না। পুরোটাই পজিটিভভাবে দেখলে সেটা হলো— প্রথমতো এটা একান্তই তামিমের সিদ্ধান্ত। এরপর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা ছিল তামিম সব সময় ড্রেসিংরুমে ওয়েলকামিং পারসন। কিন্তু ১৬টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ বা কোন প্র্যাকটিস ম্যাচ ছাড়া এবার সে কতোটুকু ওয়েলকামিং হতো তাও হয়তো তাকে ভাবিয়েছে। আর কেউ না বুঝুক তামিম নিজেও জানে এখন ব্যাটসম্যানরা কেমন উইকেটে ব্যাটিং করছে। যেখানে তাদের ভুল থাকলেও তাদের খুব বেশি কিছু করার নাই। এবারের উইকেট তো অস্ট্রেলিয়ার সময়ের উইকেট থেকেও ভয়ানক স্লো। এরপর কি অপেক্ষা করছে কে জানে? আর এতোকিছুর পরও তামিমকে দলে ঢোকার জন্য কারও খারাপ খেলার প্রয়োজনও নেই। এটা সবারই জানা। কারণ, সিম্পলি তামিম দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। তাই আমার কাছে মনে হয়েছে তামিম তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে ভেবেই নিয়েছে যেটাকে সম্মান জানানো উচিত।’

‘টপ অর্ডারের অস্থিরতাও হয়তো কিছুটা কমবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— কোন কোন সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন পাল্টে দেয়। আমার কাছে মনে হয় এই সিদ্ধান্তের কারণে তামিম যখন ওয়ানডের নেক্সট ম্যাচেই ক্যাপ্টেন হিসাবে মাঠে নামবে এই ছেলেগুলো ওর জন্য জীবন বাজি রেখে খেলবে। কারণ, কেউ করুক আর না করুক তামিম নিজেই এই ছেলেগুলোর হার্ডওয়ার্ককে প্রপার জাস্টিফাই করেছে। আর তামিম এখন পর্যন্ত সেরা এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। এই ফরম্যাটে জোর করে খেলে অবশ্যই টেস্ট, ওয়ানডের সেরা ব্যাটসম্যানকে আপসেট কেউ দেখতে চাইবে না। তামিমের এখনও অনেক ম্যাচ জেতানোর বাকি আছে। ইউ বিউটি খান, উইল বি মিস ইউ ইন ওয়ার্ল্ডকাপ।’

এ ছাড়া পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশের জয় নিয়েও লিখেছেন মাশরাফী। ক্রিকেটারদের উড়তে থাকার বার্তা দিয়ে সাবেক তারকা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে জিতেছে একরকম নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েই। এভাবে উড়াতে থাকো বন্ধুরা।’