বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল: ইন্টার্নদের হাতে লাঞ্ছিত রোগী ও স্বজনরা

জেলার খবর
Spread the love

বাংলাবাণী ডেস্ক : বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে বিক্ষুব্ধ ইন্টার্নদের মারধরে আহত হয়েছেন হৃদরোগী মাজেদা বেগম (৫০), তার ভাই ও তিন ছেলেমেয়ে। শনিবার কার্ডিওলজি বিভাগ থেকে মাজেদা বেগমকে অবজারভেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর নিয়ে বাকবিতণ্ডার জের ধরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটির সঙ্গে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। পরে রোগী ও তার লোকজনদের ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে তারা শহরে একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে যান।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী দক্ষিণপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হন। স্বজনরা তাকে শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করেন। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়। শনিবার বিকাল ৪টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মাজেদা বেগমকে সুস্থ দাবি করে তাকে কার্ডিওলজি বিভাগের সিসিইউ থেকে নিচে অবজারভেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেন। রোগীর সঙ্গে থাকা ভাই জাহিদুল ইসলাম, মেয়ে ও দুই ছেলে এতে আপত্তি জানান। তারা বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ তাকে নিচে নেয়া যাবে না। তখন এক ইন্টার্ন রোগীর ভাইকে এক নারী ইন্টার্নের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ তোলেন। এরপর সেখানে ১০-১২ নারী ও পুরুষ ইন্টার্ন জড়ো হন। তারা প্রথমে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। এরপর রোগীর লোকজনদের একটি রুমে আবদ্ধ করে মারধর করেন। তারা এতই ক্ষুব্ধ হন যে, রোগীর শরীরে থাকা ক্যাথেটার খুলে ফেলেন এবং সবাইকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে রোগী মাজেদা বেগমের পা ও অন্যদের হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এ সময় রোগীর ছেলেমেয়েরা ইন্টার্নদের হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়েও রেহাই পাননি। তাদের ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেন।

সন্ধ্যার দিকে রোগী ও তার অসহায় স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আসেন। মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য এবং অন্য চিকিৎসকদের অনুরোধে ইন্টার্নরা রোগী ও তার লোকজনকে চিকিৎসা দেয়ার নামে আবারও কার্ডিওলজি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর বিক্ষুব্ধ ইন্টার্নরা আবারও রোগীর লোকজনকে মারধর করেন। এরপর তাদের হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করা হয়।

বগুড়া ছিলিমপুর মেডিকেল ফাঁড়ির এএসআই আবদুল কুদ্দুস জানান, হাসপাতালের ইন্টার্নরা রোগী ও তার সন্তানদের মারধর করেন। ইন্টার্নরা নিজেরা রুমের কাচ ভেঙে রোগীর স্বজনদের দায়ী করেন। তাদের মারধরে রোগী ও তার ৩-৪ স্বজন আহত হয়েছেন। এমনকি রোগীর ক্যাথেটারও ছিঁড়ে ফেলা হয়। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ইন্টার্নরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেছেন। কিছুদিন আগে তারা এক রোগীর স্বজনদের মারধর করেছিলেন। এ নিয়ে কাজ বন্ধ করে ধর্মঘটও ডেকেছিলেন। ওই রোগী তখন মারা যায়।