একদিকে করোনা আতংক, অন্যদিকে পুজি বিনিয়োগ দিশেহারা কৃষক

দেশবাণী
Spread the love

রাজিব রহমান ঃ করোনা আতংকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পরেছে পটুয়াখালীর তরমূজ চাষিরা। বিক্রি হচ্ছে না তরমূজ। লোকশান আতংকে ভূগছে তারা। এভাবে চলতে থাকলে সবই লোকশান হবে বলে জানান চাষিরা।
তরমূজের ভরা মৌসূম, জেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষেত জুড়ে রয়েছে রসালো ফল তরমূজ। করোনা দুর্যোগের কারণে যথা সময়ে এ ফল কাটতে পারছেনা চাষীরা। যার ফলে ক্ষেতেই পঁচে যাচ্ছে হাজারো চাষীর স্বপ্ন। দিশেহারা হয়ে পরেছে কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলের তরমুজ চাষীরা। ধার দেনায় জর্জরিত কৃষক পরিবারগুলো কোন উপায়ান্ত না পেয়ে হাহাকার করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কিছু চাষী আংশিক জমির তরমুজ আগাম বিক্রি করেছে। অনেকেই আবার মোটেও বিক্রি করতে পারেনি। সবেমাত্র ফল কাটার উপযোগী হয়েছে। এখনই বাজারজাত করার সময়। কিন্তু বাজারজাত করতে না পারায় অনেকের তরমুজ পঁচে যাচ্ছে। লঞ্চ ও ট্রাক চলাচল না করায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ পাঠানো যাচ্ছেনা। অন্যদিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কারনে স্থানীয় বাজার গুলোতেও তরমুজের কদর নেই। একারণে পেকে যাওয়া তরমুজ গুলো ক্ষেতেই পঁচে যাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে আগামী একমাস এভাবে চলতে থাকলে অন্তত ৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে তরমুজ চাষীদের।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, পটুয়াখালী জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান মতে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা। এবছর লাভের প্রত্যাশা ছিল ৫০০ কোটি টাকারও অধিক।
এপর্যন্ত ৫% তরমুজ বিক্রি হয়েছে, বাকি তরমুজ ক্ষেতে রয়েছে। আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে করোনা পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক হয় তবে তিন ভাগের দুই ভাগ তরমুজ রক্ষা হবে। আর যদি এক মাসের অধিক এভাবে থাকে তাহলে শতকরা ৮০ ভাগ তরমুজ নষ্ট হবে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার কাউখালী চরের তরমুজ চাষী ইব্রাহিম হাওলাদার জানান, তিনি এবছর সাড়ে ৭ একর জমিতে তরমুজ দিয়েছেন। তাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬ লাখ টাকা। সে এখন পর্যন্ত কোন তরমুজ বিক্রি করতে পারেননি। একই এলাকার তরমুজ চাষী আলী আজগর চৌকিদার জানান, সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যায় করে সে এবছর ৫ একর জমিতে তরমুজ দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তরমুজ বিক্রি করতে পারেনি। কোড়ালিয়া গ্রামের বশির হাওলাদার জানান, সে ১৮ একর জমিতে তরমূজ চাষ করেছে। তাতে তার খরচ হয়েছে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছে মাত্র ১ লাখ টাকা। বাকি তরমূজ ক্ষেতেই রয়ে গেছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, তরমুজ পেকে গেলেই নষ্ট হয়ে যায়না। কিছু দিন সংরক্ষণ করা যায়। কাটার পরেও ৭/৮ দিন রাখা যায়। এবং গাছে নিয়মিত পানি দিয়ে রাখলে একটু দেরীতে কাটলেও সমস্যা হয়না।